হোটেল রেটিং সিস্টেম: ৩ স্টার, ৫ স্টার এবং ৭ স্টার হোটেলের মধ্যে পার্থক্য

Started by kundu, Jan 19, 2025, 10:45 AM

Previous topic - Next topic

kundu

৩ স্টার, ৫ স্টার এবং ৭ স্টার হোটেলের মধ্যে পার্থক্য কী:

ঠান্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে এখন চলছে ভ্রমণেরও মৌসুম। আর অচেনা জায়গায় কয়েক দিনের জন্য ভ্রমণে গেলে হোটেলই ভরসা।

সাধারণত রিভিউ বা রেটিংয়ের ভিত্তিতে গ্রাহকেরা ভ্রমণের আগে হোটেল নির্বাচন করে থাকেন। হোটেলগুলোর নামের পাশেই তা কত তারকাখচিত বা কত স্টার-যুক্ত সে উল্লেখ থাকে। সবাই জানেন, বেশি স্টারের অর্থ হোটেলের সুযোগ-সুবিধাও বেশি। স্টার অনুযায়ী হোটেলগুলোর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। 

কিন্তু বিভিন্ন হোটেলের 'স্টার' রেটিং নির্ধারণ করেন কারা! জানলে অবাক হবেন যে, হোটেলের জন্য এককভাবে কোনো স্টার নির্ধারক কমিটি বা সংস্থা নেই পুরো বিশ্বে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে এটি নির্ধারণ করে থাকে।

সাধারণত রুমের আকার, পরিচ্ছন্নতা, সুযোগ-সুবিধা এবং পরিষেবার গুণমানের মতো বৈশিষ্ট্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে মানদণ্ডের একটি সেট মূল্যায়ন করা হয় এবং সামগ্রিক পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে হোটেলটিকে র‌্যাঙ্কিং দেওয়া হয়।

বিংশ শতকের গোড়ার দিকে সম্ভবত প্রথম হোটেলগুলোর স্টার রেটিংয়ের প্রচলন শুরু হয়। কারও মতে, উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনের (এএ) হাত ধরে এর সূচনা। আবার কেউ মনে করেন, ফোর্বস ট্রাভেল গাইড সর্বপ্রথম হোটেলের এই রেটিং স্টার সিস্টেম চালু করে।
 
বর্তমানে উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকায় হোটেল রেটিং প্রদানের জন্য দায়ী দুটি প্রধান সংস্থা হলো আমেরিকান অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন (এএএ) এবং ফোর্বস ট্রাভেল গাইড। অন্যদিকে ইউরোপের হোটেলগুলোর জন্য নিয়োজিত রয়েছে ইউরোপিয়ান হোটেল স্টারস ইউনিয়ন নামক বিশেষ সংস্থা।

হোটেলের রেটিং দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি সংস্থার রয়েছে নিজস্ব মানদন্ড এবং শর্ত। দেখা যাবে, নেপালের একটি পাঁচতারকা হোটেলের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিংবা অস্ট্রেলিয়ার তিন তারকা হোটেলও তুলনামূলকভাবে বেশি অভিজাত এবং বিলাসবহুল।

তবে মোটা দাগে এই স্টার রেটিং সিস্টেমে ওয়ান স্টার থেকে ফাইভ স্টার পর্যন্ত হোটেলগুলোর সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেওয়া যাক-   

ওয়ান স্টার বা একতারকা হোটেল:
ওয়ান স্টার হোটেলে থাকার খরচ তুলনামূলকভাবে খুব কম। বাজেট সাশ্রয়ী হওয়ায় যে কেউ এই হোটেলে উঠতে পারে। এতে আপনি পরিষ্কার ঘর, ঘুমানোর জন্য একটি বিছানা, টয়লেট সুবিধা এবং সর্বোচ্চ গরম ও ঠান্ডা পানির সুবিধা পাবেন। কিন্তু এসব হোটেলের রুম আকারে খুবই ছোট হয়ে থাকে।

টু স্টার বা দুইতারকা হোটেল:
টু স্টার হোটেলের সুবিধা ওয়ান স্টার হোটেলের চেয়ে কিছুটা ভালো। এই ধরনের হোটেলে রুমের আকার একটু বড় হতে পারে। এখানে রাত্রিযাপনের খরচ ১৫০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এটি ঘুমানোর জন্য একটি ভাল বিছানা, পরিষ্কার বাথরুম, টেবিল-চেয়ার এবং অন্যান্য কিছু সুবিধা দেয়। কিছু হোটেলে টেলিফোন ও টেলিভিশন থাকলেও সেগুলো পুরানো এবং নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাই বেশি!

থ্রি স্টার বা তিনতারকা হোটেল:

তিনতারকা হোটেলের রুম আকারে বড় এবং এতে এসি সুবিধা থেকে শুরু করে ওয়াই-ফাই, টিভি সুবিধা সবই থাকে। এছাড়াও রয়েছে পার্কিং সুবিধা। এ হোটেলে থাকতে গেলে দিনপ্রতি অন্তত ৩-৪ হাজার টাকা গুনতে হবে। অনেক তিনতারকা হোটেলে ব্যুফে ব্রেকফাস্ট সুবিধা দেখা যায় এখন। 
ফোর স্টার বা চারতারকা হোটেল:

ফোর স্টার হোটেলগুলো স্যুইট রুম এবং বাথটাবের মতো সুবিধা প্রদান করে। এছাড়া ওয়াইফাই, মিনি বার, ফ্রিজ ইত্যাদি সুবিধা দেওয়া হয়। রয়েছে টিভি, সুইমিং পুল, সাইড বার, কফিশপ সহ অন্যান্য ফ্যাসিলিটিজ। এ ধরনের হোটেলে থাকার খরচ কিছুটা বেশি। বাংলাদেশে এখন প্রচুর চারতারকা হোটেল এবং রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। 

ফাইভ স্টার বা পাঁচতারকা হোটেল:

পাঁচতারা হোটেলে আতিথেয়তার প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়। গ্রাহকদের জন্য আরামদায়ক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে এখানে জিম, পার্সোনাল হেলথকেয়ার সহ নানা বিলাসবহুল সুবিধা থাকে। ২৪ ঘণ্টা রুম সার্ভিস সুবিধা পাওয়া যায়। এই হোটেলের রুমের আকার অনেক বড় হয়।
সেভেন স্টার বা সাততারকা হোটেল:

ইদানিং কিছু হোটেল নিজেদের সেভেন স্টার বলে দাবি করছে। তবে এই হোটেলের কোনো নির্ধারিত বৈশিষ্ট্য এখনও নেই। এখানকার রুম ভাড়া ও খাবারের খরচ বেশ ব্যয়বহুল।